জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি অবসরপ্রাপ্ত (বহিষ্কৃত) ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এসময় কারা মহাপরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, চিকিৎসক ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। শনিবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এর আগে ফাঁসি কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে রাত পৌনে ১১টায় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল, জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, ঢাকার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো. মাইনুল আহসান কারাগারে প্রবেশ করেন।
গত বুধবার আব্দুল মাজেদ কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি তার সেই আবেদন নাকচ করে দেন বলে গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট যে সেনা সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল আব্দুল মাজেদ তাদের একজন।
বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষে ২০০৯ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ আদালত থেকে ১১ আসামির ফাঁসির রায় আসে। তাদের মধ্যে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি কার্যকর করা হলেও মাজেদসহ ছয়জন পলাতক থাকেন।
দুই দশকেরও বেশি সময় ভারতে পালিয়ে থাকা মাজেদ গত মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার হন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করতে বুধবার ঢাকার জজ আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সময় বহু বছর আগেই পেরিয়ে যাওয়ায় আবদুল মাজেদের সামনে সেই সুযোগ আর ছিল না। প্রাণ বাঁচাতে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন, তার সেই চেষ্টাও বিফলে যায়।
এর আগে আজকে সন্ধ্যায় এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় আব্দুল মাজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কারাগারে যান তার পরিবারের সদস্যরা।
খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করার সব ধরনের প্রস্তুতি শুক্রবার দিনের বেলাতেই নিয়ে রাখে কারা কর্তৃপক্ষ। জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে মো. আবুল, তরিকুল ও সোহেলসহ ১০ জল্লাদের একটি দল তৈরি প্রস্তুত রাখে ঢাকা জেল কর্তৃপক্ষ। আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হয় ফাঁসির মঞ্চ।